
ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মি. রমিস সেন ঢাকার বনানীস্থ বিলাসবহুল হোটেল ‘শেরাটন ঢাকা’র গ্র্যান্ড বলরুমে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার আয়োজন করেন। ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, সরকারী উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।
রিপাবলিক অব তুরস্কের এই জাতীয় দিবস অনুষ্ঠান ছিল সৌহার্দ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার এক অনন্য মেলবন্ধন। অতিথিরা তুরস্ক ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব, সংস্কৃতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে উভয় দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়, এরপর রাষ্ট্রদূত রমিস সেন অতিথিদের স্বাগত জানান এবং তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। দলটির নেতৃত্ব দেন সংগঠনের নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ও মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, এবং নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব মোবারক হোসাইন।
জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত অন্যান্য কূটনীতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা তুরস্ক ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা, মুসলিম বিশ্বের ঐক্য, এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে মান্যবর রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের প্রতি এক লিখিত শুভেচ্ছাবার্তা হস্তান্তর করা হয়। এই বার্তায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান তুরস্কের জনগণ ও সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক – এই কামনা করেন।
শুভেচ্ছাবার্তায় ডা. শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন যে, তুরস্ক ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সবসময় মুসলিম বিশ্বের আত্মমর্যাদা, ন্যায়বিচার এবং মানবতার পক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের জনগণ তুরস্কের উন্নতি, অগ্রগতি ও মানবিক ভূমিকা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
অনুষ্ঠান চলাকালে অতিথিরা একে অপরের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি জনগণের পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। অতিথিদের জন্য তুর্কি ঐতিহ্যবাহী খাবার ও সংস্কৃতির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ছিল, যা অনুষ্ঠানে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তুরস্কের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সবসময় মূল্যায়ন করে। দুই দেশের জনগণের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধন ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুরস্ক-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কূটনৈতিক মহলের মতে, এমন আয়োজন শুধু রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সম্পর্কই নয়, জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও মানসিক সংযোগকেও গভীর করে তোলে।
সার্বিকভাবে তুরস্কের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি ছিল বন্ধুত্ব, শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতীক। এতে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি দুই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।