
ক্রাইম এডিশন অনলাইন
সরকারি বদলির আদেশে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে তিনি শুক্রবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে তিনি বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব–পরিকল্পনা বা যৌক্তিক কারণ ছাড়াই তাঁকে হঠাৎ এমন দূরবর্তী স্থানে বদলি করা হয়েছে, যা তাঁর জন্য অমানবিক ও অযৌক্তিক।
ফেসবুক লাইভে কাশেম দাবি করেন, বহু বছর ধরে তিনি নিজের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে নেতৃত্বও দিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “যে জায়গায় বদলি করা হয়েছে, সেখানকার সঙ্গে আমার কোনো প্রশাসনিক কিংবা একাডেমিক সম্পর্ক নেই। শুধু দূরত্বই নয়, হঠাৎ করে এভাবে বদলি করা জীবনের ওপর অযথা চাপ তৈরি করে।”
লাইভে তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত হওয়া উচিত। কারণ একটি বদলি শুধু একজন ব্যক্তির কর্মস্থল পরিবর্তনই নয়—তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে পরিবার, সন্তানদের পড়াশোনা, ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও সামাজিক অবস্থান। এমন দীর্ঘ দূরত্বে হঠাৎ বদলি সিদ্ধান্ত একজন শিক্ষকের জন্য মানসিক চাপ তৈরি করে।
অভিযোগ করে কাশেম বলেন, কিছু ক্ষেত্রে প্রশাসনিক প্রভাব বা ব্যক্তিগত বিরোধ থেকেও এমন সিদ্ধান্ত হয়। তিনি দাবি করেন, তার ক্ষেত্রেও এমন তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তের যথাযথ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। লাইভে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “শিক্ষকদের প্রতি সম্মান দেখাতে হলে আমাদের কর্ম–পরিবেশ ও স্থানান্তর নীতিমালায় স্বচ্ছতা আনা জরুরি।”
বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কাশেম বলেন, শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলেন। তাই তাঁদের সঙ্গে যে কোনো সিদ্ধান্তে মানবিক বিবেচনা থাকা প্রয়োজন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
লাইভ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক সমাজের অনেকেই এতে প্রতিক্রিয়া জানান। কেউ কেউ আবুল কাশেমের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে বদলি নীতিমালায় সংস্কারের দাবি জানান। অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, যেকোনো সরকারি দায়িত্বে বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ; তবে দূরত্ব ও মানবিক দিক বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
এদিকে, শিক্ষক সমাজের একটি অংশ বলছে, এ ধরনের বিষয়গুলোকে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং পেশাগত মর্যাদা ও মানবিক বাস্তবতার আলোকে দেখা উচিত। কারণ বদলি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে পরিচালিত হলে শিক্ষকরা আরও মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন।
ঘটনাটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চললেও এখনো সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কাশেমের দাবি বিবেচনায় নেওয়া হবে কি না, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য।