ক্রাইম এডিশন ডেস্ক। ২১ এপ্রিল ২০২৫
ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সোমবার দুপুর ২টার দিকে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে গ্রেপ্তার করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এবং জানায়, মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি মামলা যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত, যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘদিন সক্রিয় মনিরুল ইসলাম ২০১৬ সাল থেকে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে তিনি ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই আসনটি শূন্য হয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুজনিত কারণে। তবে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের সরকারের পতনের পর থেকে মনিরুল ইসলাম আত্মগোপনে ছিলেন।
ডিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো নানা দিক থেকে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
গ্রেপ্তারের পর মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি সদর দফতরে রাখা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে বা ডিবি থেকে মামলার বিস্তারিত বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনিরুল ইসলামের গ্রেপ্তার দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এই ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখযোগ্য বলে মনে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই গ্রেপ্তারের ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিবির পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
ডিএমপি জানিয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের পদক্ষেপ চলতেই থাকবে। এর মাধ্যমে সামাজিক শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাদের গুরুত্ব আরোপ করছে।
সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ঘটনায় সতর্ক রয়েছে এবং তারা আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন না হওয়ার বিষয়টি মনিটর করছে।
আদালত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন এবং বর্তমানে বিচার কার্যক্রম চলছে।
মনিরুল ইসলামের আইনজীবী দল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ডিবি ও ডিএমপি বলছে, দেশের সুশাসন, উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা রক্ষায় এমন পদক্ষেপ অপরিহার্য। ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সুতরাং, এই গ্রেপ্তারি অভিযান দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে এবং সমাজে এর প্রভাব অনিবার্য।