সোহেল রানা মাসুদ | ক্রাইম এডিশন | ৭ মে ২০২৫
দীর্ঘ ১৭ বছর পর অবশেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ও চিকিৎসক ডা. জোবাইদা রহমান। মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বিশেষ ফ্লাইটে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
প্রবাসে কাটানো প্রায় দুই দশকের পর এটি ছিল ডা. জোবাইদার বহুল আলোচিত প্রত্যাবর্তন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর এই দেশে ফেরা শুধু পারিবারিক বা ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং এর মধ্যে রয়েছে রাজনীতির ভবিষ্যৎ সমীকরণও।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় তাঁর নাম উঠে আসে। মামলায় তাঁর স্বামী তারেক রহমান ও মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকার একটি আদালত তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন। যদিও ২০২৪ সালে দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষিতে আদালতের সেই রায় স্থগিত করা হয়।
ডা. জোবাইদা রহমান এর আগে লন্ডনের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে দেশে ফেরেননি। তবে এবার পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় দেশে ফেরা সম্ভব হয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকায় এসে তিনি এখন তাঁর পৈত্রিক বাসভবন, ধানমন্ডির মাহবুব ভবনে অবস্থান করছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান।
ডা. জোবাইদা রহমান পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন থেকে মেডিসিনে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক পরিচিতির পাশাপাশি রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হয়ে আসছিল।
বিএনপি সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তাঁর দেশে ফেরা ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্ব পুনর্বিন্যাসেও ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ, তাঁর রয়েছে উচ্চশিক্ষিত ও প্রজ্ঞাবান নারী নেত্রী হিসেবে পরিচিতি, যা বিএনপির আগামী দিনের কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে তাঁর দেশে আগমনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দর ও ধানমন্ডি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ডা. জোবাইদা রহমান আপাতত ব্যক্তিগত সময় কাটাচ্ছেন এবং শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন কিনা, সে বিষয়ে পরে জানানো হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন ও নেতৃত্ব প্রসঙ্গে ডা. জোবাইদার প্রত্যাবর্তন একটি বড় বার্তা বহন করছে।