ক্রাইম এডিশন ডেস্ক।
বাংলাদেশের নাট্যজগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে ‘দেনা পাওনা’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটক। এই নাটকে অ্যালেন শুভ্র এবং তাবাসসুম ছোঁয়ার মনকাড়া অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল ‘সিনেমাওয়ালা’-তে সম্প্রচারিত নাটকটি অল্প সময়েই ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
প্রথমদিকে মাত্র ছয় পর্বের পরিকল্পনায় নাটকটির কাজ শুরু হলেও দর্শকদের ব্যাপক সাড়া এবং আগ্রহের কারণে নির্মাতারা নাটকটির পর্ব সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে ধারাবাহিকটির বিশটি পর্ব প্রকাশিত হয়েছে এবং আরও নতুন পর্বের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
নাটকটি পরিচালনা করেছেন কেএম সোহাগ রানা। তিনি বাংলাদেশের নাট্যজগতে একজন পরিচিত ও মেধাবী নির্মাতা হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছেন। ‘দেনা পাওনা’ নাটকটি সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি যখন প্রথম গল্পটি হাতে পাই, তখনই বুঝেছিলাম এটা দর্শকদের মধ্যে দাগ কাটবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এত ভালো সাড়া পাব, সেটা ভাবিনি।”
নাটকের কাহিনির পটভূমি গড়ে উঠেছে আধুনিক শহুরে জীবনের পারিবারিক ও সামাজিক টানাপড়েনকে কেন্দ্র করে। চরিত্রগুলো বাস্তবসম্মতভাবে চিত্রায়িত হওয়ায় দর্শকরা নিজেদের জীবনের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারছেন। এতে রয়েছে সম্পর্কের জটিলতা, ভালোবাসার টানাপড়েন, সামাজিক প্রতিকূলতা এবং জীবনের নানা রঙ।
অ্যালেন শুভ্র, যিনি নাটকটিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন, তার অভিনয় দক্ষতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। নাটকটির জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গল্পটি আমাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি দৃশ্যই এমনভাবে নির্মিত হয়েছে যেন দর্শকরা সেটিকে অনুভব করতে পারেন। আমি নিজেও অভিনয়ের সময় চরিত্রের গভীরতার মধ্যে ডুবে যাই।”
তাবাসসুম ছোঁয়া, যিনি নাটকটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন, বলেন, “এই নাটকটি আমার জন্য অনেক স্পেশাল। শুভ্র ভাইয়ার সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। আমাদের রসায়ন দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে, সেটা জেনে খুব ভালো লাগছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নাটকটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। নাটকের প্রতিটি পর্ব প্রকাশের পরপরই তা ট্রেন্ডিং তালিকায় চলে আসছে। দর্শকরা নাটকের সংলাপ, অভিনয় এবং দৃশ্যায়নের প্রশংসা করছেন। অনেকেই নাটকটি নিয়ে রিভিউ দিচ্ছেন, মেমে বানাচ্ছেন, এমনকি চরিত্রগুলোর নাম নিয়েও তৈরি হয়েছে ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ।
‘সিনেমাওয়ালা’ চ্যানেলের একজন মুখপাত্র জানান, “আমরা কখনো ভাবিনি নাটকটি এতটা জনপ্রিয় হবে। দর্শকদের ভালোবাসা আমাদের উৎসাহ দিচ্ছে। তাই আমরা ধারাবাহিকভাবে নতুন নতুন পর্ব তৈরি করছি এবং ভবিষ্যতে আরও বড় কিছুর পরিকল্পনা রয়েছে।”
নাটকটি পারিবারিক দর্শকদের মাঝেও সমানভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কোনো অশ্লীলতা বা অতিরঞ্জন ছাড়াই নাটকটি তার বাস্তবধর্মী গল্প এবং মনকাড়া অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউটিউবভিত্তিক নাটকগুলো বাংলাদেশের বিনোদন জগতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নির্মাতারা নতুন গল্প, মুখ এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শকদের আকৃষ্ট করছেন। ‘দেনা পাওনা’ সেই ধারারই একটি সফল উদাহরণ, যা প্রমাণ করেছে ভালো কনটেন্ট হলে দর্শক সেটি খুঁজে নেয় এবং ভালোবাসে।
নাটকটির পরবর্তী পর্ব নিয়ে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই জানতে চাইছেন গল্পের মোড় কোন দিকে যাবে, চরিত্রগুলোর ভবিষ্যত কী হবে, এবং শেষ পর্যন্ত গল্প কোন পরিণতি পাবে। নির্মাতারা জানিয়েছেন, পরবর্তী পর্বগুলো আরও চমকপ্রদ ও আবেগঘন হতে চলেছে।
Leave a Reply