ক্রাইম এডিশন ডেস্ক। লালমনিরহাট।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে এক কেজি গাঁজাসহ এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ২২ জুন ২০২৫ (শনিবার) তারিখে এই অভিযানটি পরিচালিত হয়। পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, এ অভিযানটি পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম-এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দোয়ানী পিত্তিফাটা মৌজার তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প এলাকায় স্থাপিত চেকপোস্টে মাদকবিরোধী এই অভিযান চালানো হয়। বড়খাতা বাজার থেকে তিস্তা ব্যারেজগামী মূল পাকা সড়কে সন্দেহভাজন একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেহ ও সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে এক কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তির নাম মোঃ ইউনুস আলী (২৪)। তিনি স্থানীয়ভাবে একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশি তৎপরতা ও অভিযান পরিকল্পনা
মাদক নির্মূলে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ বিগত কয়েক মাস ধরেই ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে এসব অভিযান। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুবসমাজকে রক্ষায় পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম বিভিন্ন সময় সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে তিনি জেলার প্রতিটি থানা ও ইউনিটকে মাদকবিরোধী অভিযানে তৎপর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় হাতীবান্ধা থানা পুলিশ এ সফল অভিযান পরিচালনা করে।
আইনি ব্যবস্থা ও পরবর্তী কার্যক্রম
আটক ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছেন থানার একজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আদালতের মাধ্যমে তাকে হাজির করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সামাজিক সচেতনতার আহ্বান
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ জনগণের সহায়তায় মাদকের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, শুধুমাত্র আইনি ব্যবস্থায় নয়, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেও মাদক নির্মূল সম্ভব। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে সকল নাগরিককে আহ্বান জানানো হয়েছে— মাদককে না বলুন, মাদকের তথ্য দিন, এবং সচেতন হোন ও অন্যকেও সচেতন করুন।
মাদক নির্মূলে জনগণের ভূমিকা
মাদক সমাজের জন্য এক ভয়াবহ ব্যাধি। এটি একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি, অন্যদিকে তেমনি সামাজিক ও পারিবারিক কাঠামোকেও ধ্বংস করে দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার উপর নির্ভর করলেই চলবে না। প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে এবং অপরাধ সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করতে হবে।
মাদকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
Leave a Reply