সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন।
রংপুর জেলার পীরগাছা থানা পুলিশ এক সফল বিশেষ অভিযানে তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে এবং এই চক্রের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়েছে একটি সক্রিয় আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্র।
ঘটনাটি ঘটে ৫ জুলাই ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে, যখন পীরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ শফিকুল ইসলাম আকন্দ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি সঙ্গীয় ফোর্সসহ রংপুর জেলার পীরগাছা থানার ইটাকুমারী ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামে রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অভিযান চালান।
অভিযানে সাতভিটা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল মোন্নাফ (৩৪) এবং ইসমাঈল হোসেনের ছেলে হাসেম আলী (৩৫) নামের দুই ব্যক্তিকে তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল কেনাবেচার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চোরাই মোটরসাইকেলগুলো।
পরে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা স্বীকার করে যে, তারা একটি সংগঠিত আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্য। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানার দশলিয়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মামুন মিয়া (৩০) এবং গাইবান্ধা সদর থানার পশ্চিম মান্দুয়াপাড়া এলাকার ওসমান গনির ছেলে বাদশা মিয়া (৩০) কে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আটক করা হয়।
এই চক্রের আরও এক সদস্যকে পুলিশ আটক করেছে, তবে তার নাম ও পরিচয় তদন্তের স্বার্থে এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, এই চোরচক্র দীর্ঘদিন ধরে রংপুর, গাইবান্ধা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে চোরাই মোটরসাইকেল সংগ্রহ করে, সেগুলো বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিল। চক্রটি এতটাই সুসংগঠিত ছিল যে তারা বিভিন্ন রুটে মোটরসাইকেল সরবরাহের জন্য নির্দিষ্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। এদেরকে ধরতে দীর্ঘদিন ধরেই অনুসন্ধান চালিয়ে আসছিল পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া মোটরসাইকেলগুলোর প্রকৃত মালিকদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযান চলমান রয়েছে এবং চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে, যদি কোনো তথ্য থাকে তবে তা গোপনীয়ভাবে পুলিশকে জানাতে।
পুলিশের এই সাহসিক অভিযানকে রংপুরবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে। সাধারণ মানুষের সম্পদ রক্ষায় এমন উদ্যোগ পুলিশি নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
Leave a Reply