ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
“সেবার ব্রতে চাকরি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি), জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে লালমনিরহাটে। শনিবার (১৭ আগস্ট ২০২৫ খ্রি.) সকাল ৮টায় জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রথম দিনে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের অংশগ্রহণে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিন প্রার্থীদের Physical Endurance Test (PET) অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার ধারাবাহিকতায় পুরুষ ও নারী উভয় প্রার্থী অংশ নেন চারটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে। এর মধ্যে ছিল—
১. ২০০ মিটার দৌড়
২. পুশ আপ
৩. লং জাম্প
৪. হাই জাম্প
সকাল থেকেই মাঠে উপস্থিত ছিলেন প্রার্থীরা। পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ নিরপেক্ষভাবে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
দায়িত্বে ছিলেন যারা
এই নিয়োগ কার্যক্রমে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম। এছাড়া, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন এআইজি (আর্মস এন্ড অ্যামুনিশন) জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পলওয়েল) জনাব মোহাম্মদ হান্নান মিয়া।
অন্যদিকে, রংপুর রেঞ্জ কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ জয়নাল আবেদীন এবং একই পদে দায়িত্বে থাকা জনাব মোঃ ইলিয়াছ হোসেন।
এছাড়াও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন জনাব ডা. মোঃ কামরুল হাসান প্রিন্স, মেডিকেল অফিসার, পুলিশ হাসপাতাল, লালমনিরহাট। সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ শাহাদাত হোসেন সুমা, বিপিএম (বার)। সাথে ছিলেন জনাব এ কে এম ফজলুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এ-সার্কেল, লালমনিরহাট এবং জনাব জয়ন্ত কুমার সেন, সহকারী পুলিশ সুপার, বি-সার্কেল, লালমনিরহাট।
জেলা পুলিশের আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নিয়োগ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থেকে সার্বিক নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান
কার্যক্রম শেষে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম সকল প্রার্থীকে শুভকামনা জানিয়ে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আগামীকাল (১৮ আগস্ট ২০২৫ খ্রি.) সকাল ৭টায় সকল প্রার্থীকে মাঠে উপস্থিত থাকতে হবে, যাতে পরবর্তী ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করা যায়।”
তিনি আরও জানান, আজকের PET ইভেন্ট নিরপেক্ষভাবে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য তিনি নিয়োগ বোর্ডের সকল সদস্য এবং নিয়োগ ডিউটিতে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রমের তাৎপর্য
পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ কার্যক্রম একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। কারণ ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের শারীরিক ফিটনেস অপরিহার্য।
আজকের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রমে প্রার্থীরা তাদের দক্ষতা, সহনশীলতা ও প্রস্তুতি প্রমাণের সুযোগ পেয়েছেন। এর মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে, কে প্রকৃতপক্ষে পুলিশ বাহিনীর চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত।
সমাপ্তি
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে অনুষ্ঠিত এই কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করায় প্রার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় আগামী দিনের পরীক্ষাগুলোতেও একইভাবে ন্যায়সংগত ও পেশাদার পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ পুলিশের এই নিয়োগ কার্যক্রম শুধুমাত্র একটি চাকরির সুযোগ নয়, বরং দেশের সেবা করার এক মহৎ অঙ্গীকার। দ্বিতীয় দিনের শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে সেই অঙ্গীকারের পথে আরও একধাপ অগ্রসর হলো লালমনিরহাট জেলার তরুণ-তরুণীরা।
Leave a Reply