
ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
৫ অক্টোবর ২০২৫ ইং রবিবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মি. রেতো রেংগলি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ডা. শফিকুর রহমান এর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও প্রাতঃরাশ বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এক উষ্ণ ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে, যেখানে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
রাষ্ট্রদূতের শুভেচ্ছা ও স্বাস্থ্য খোঁজখবর
সাক্ষাতের শুরুতেই রাষ্ট্রদূত মি. রেংগলি ডা. শফিকুর রহমানের সুস্থতার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর দ্রুত পূর্ণ আরোগ্য কামনা করেন। এরপর শুরু হয় আলোচনাপর্ব। বৈঠকে তারা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়গুলো নিয়ে মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রদূত রেংগলি বলেন, “সুইজারল্যান্ড সবসময় বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় অংশীদার হিসেবে দেখে। উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সুইজারল্যান্ডের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।”
তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন যাত্রায় সুইজারল্যান্ডের দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন —
হেড অব পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও কমিউনিকেশন অ্যাফেয়ার্স মি. আলবের্তো জিওভানেত্তি,
এবং সিনিয়র পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও প্রেস অফিসার মি. খালেদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন —
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের,
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন,
এবং আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।
বৈঠকে মূল আলোচনার বিষয়বস্তু
বৈঠকে মূলত আলোচনা হয় বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা, বিদেশি বিনিয়োগের নতুন সুযোগ, এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে।
উভয় পক্ষই একমত হন যে, বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও গভীর ও ফলপ্রসূ হবে।
রাষ্ট্রদূত রেংগলি বলেন, “বাংলাদেশের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সুইজারল্যান্ড বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সুইজারল্যান্ড একটি উন্নত দেশ, যাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান বাংলাদেশে প্রয়োগ করা গেলে উভয় দেশই উপকৃত হবে। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়তে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “সত্যনিষ্ঠ নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মিলেই বাংলাদেশকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।”
আন্তরিক পরিবেশে সৌজন্য বৈঠক
বৈঠকটি শুধুমাত্র কূটনৈতিক আলাপ নয়, বরং বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রতিফলন ছিল।
দু’দেশের প্রতিনিধিরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সৌজন্য প্রকাশ করেন। আলোচনার শেষে উভয় পক্ষ পরস্পরের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাতের পুরো সময়জুড়ে উপস্থিতদের মধ্যে একধরনের আন্তরিকতা ও পারস্পরিক সম্মানের পরিবেশ বিরাজ করছিল।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূত ও আমীরে জামায়াত একসঙ্গে ছবি তোলেন এবং ভবিষ্যতে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও অঙ্গীকার
বৈঠকের সমাপ্তিতে দুই পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী দিনে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
তারা বিশ্বাস করেন, এই ধরনের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে এবং উন্নয়ন সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের টেক্সটাইল, জ্বালানি, প্রযুক্তি ও কৃষি খাতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
এই বৈঠক ভবিষ্যতের বিনিয়োগ সম্প্রসারণে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।